কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ব্ল্যাক রাইস। ব্ল্যাক রাইস ধান চাষ করে সবার দৃষ্টি কেড়েছেন সিঙ্গাপুরফেরত রেজওয়ানুল সরকার ওরফে সোহাগ।
ব্ল্যাক রাইস ধান সাধারণ ধানের মতো চাষ হলেও এ ধান চাষে অতিরিক্ত সার বা পানির প্রয়োজন হয় না।
প্রয়োজন হয় না আলাদা কোনো পরিচর্যারও। ব্ল্যাক রাইস একটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ধান। এ ধানের চাল উৎপাদন করে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া গেলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন খানসামা উপজেলা কৃষি অফিসার বাসুদেব রায়।
দিনাজপুরের খানসামায় অন্যান্য আধুনিক ধান চাষের মতোই প্রথমবার এই ব্ল্যাক রাইস চাষ করেছেন রেজওয়ানুল সরকার ওরফে সোহাগ।
সোহাগ খানসামার খামারপাড়া ইউপির ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মৃত জোনাব আলী সরকারের ছেলে।
ধানের শীষও সাধারণ ধানের চেয়ে বড়। অন্যান্য ধানের মতোই এ ধানের পরিচর্যা করতে হয়। ধানগুলো দেখতে যেমন কালো, চালও দেখতে তেমন কালো। এ চালের ভাতও কালো এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। বাড়িতে পরিবার নিয়ে খাওয়ার এবং উৎপাদন কেমন হয়, তা জানতে প্রথম ব্ল্যাক রাইস বা কালো ধান চাষ করেছেন বলে জানান সোহাগ।
তিনি জানান, ব্ল্যাক রাইসের ওপরে প্রামাণ্য চিত্র দেখে জেনেছি কালো চাল ডায়াবেটিস, স্নায়ুরোগ ও বার্ধক্য প্রতিরোধক। এতে ভিটামিন, ফাইবার ও মিনারেল রয়েছে। তাই কালো চাল উৎপাদনে উদ্যোগী হয়েছি। এই ধানের উৎপাদনের পরিমাণ এবং মূল্য নির্ধারণ এখনই করা যাচ্ছে না। ধান ঘরে তুলে চাল করার পর পরিমাণ বোঝা যাবে। আর বাজারজাত করার মাধ্যমে জানা যাবে আর্থিক মূল্য। এ জন্য কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে।
তিনি ধারণা করছেন, বিঘাপ্রতি জমিতে ১৫-১৭ মণ ধান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মূল্য যদি আকর্ষণীয় হয় এবং চাহিদা যদি থাকে তাহলে আগামীতে ব্ল্যাক রাইসের চাষ আরও বৃদ্ধি করব। সিঙ্গাপুরে অবস্থানকালে আমি দেখেছি সেখানকার মানুষ, বিশেষ করে চীনের মানুষ ব্ল্যাক রাইস বেশি দামে কিনে তার ভাত খেত। আমরা ৫ কেজি সাধারণ চাল কিনতাম ১২ থেকে ১৬ ডলারে। আর তারা ৫ কেজি ব্ল্যাক রাইস কিনত ২০ ডলারে। তারা বলত ব্ল্যাক রাইস শরীরে চর্বি জমতে দেয় না ধীরে ধীরে হজম হয়। এ কারণে ক্ষুধা কম লাগে।
খানসামা উপজেলা কৃষি অফিসার বাসুদেব রায় জানান, ব্ল্যাক রাইস একটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ধান। রোগ প্রতিরোধী এ ধানের চাল উৎপাদন করে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া গেলে দেশের কৃষি অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।